বাংলাদেশের মধ্যে সবচাইতে সুন্দর জায়গা গুলো চট্রগ্রাম বিভাগের মধ্যেই অবস্থিত, এই ব্যপারে কারো দ্বীমত নেই। আর তারই মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় এবং এশিয়া মহাদেশের মধ্যে সর্ব বৃহত্তম ৭৫ মাইল দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত ‘কক্সবাজার’। যেখানে প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ পর্যটক আসে।

কিভাবে যাবেন কক্সবাজার?

ঢাকা কমলাপুর ষ্টেশন থেকে প্রতিদিনই একাধিক ট্রেন চট্রগ্রামের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। সল্প খরচে আরামদায়ক ভ্রমন এর জন্য ট্রেন খুব জনপ্রিয়। আপনি চাইলে বাসে বা বিমানে যেতে পারেন। বিমানে হলে আপনাকে চট্রগ্রাম যাবার কোন প্রয়োজন নেই। আপনি সরাসরি কক্সবাজার যেতে পারবেন। ভিন্ন ভিন্ন কমপানি ভেদে প্রতিদিনই ২ থেকে ৩ টা বিমান কক্সবাজার এর উদ্দেশ্যে ঢাকা আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমান বন্দর থেকে ছেড়ে যায়।

আপনি যদি ট্রেনে যান তবে সরাসরি চট্রগ্রাম ষ্টেশনে গিয়ে নামবেন। সেখান থেকে বাসে যেতে হবে। তবে মাইক্র বা কার-ও পাওয়া যায়, তবে সেই গুলোতে যাওয়া নিরাপদ নই। কারন কক্সবাজার এর রাস্তাই কোথাও কোথাও লবন পানির কারণে পিচ্ছিল হয়ে থাকে। আর সেই কারনেই বাসে যাওয়াই উত্তম। তবে বাসে যেতে হলে রিক্সায় করে বাস-স্ট্যান্ডে যাবেন। ষ্টেশনের পাশে থাকা কোন বাসে উঠবেন না। কারন সেই গুলো লোকাল বাস। যদিও আপনাকে তারা অনেক গোল-তাল বুঝবে। কিন্তু তাদের কথাই কোন কান দেবার দরকার নেই।

বাস-স্ট্যান্ডে গিয়ে আপনি অনেক বাস পাবেন, তবে আমি যতটুক জেনেছি “সৌদিয়া” বসটির সার্ভিস ভালো। অর্থাৎ সেই বাসটি অল্পকিছু সংখ্যক জায়গায় থামে।

কক্সবাজার পৌছার পর যদি হোটেলে উঠতে হয়, আর যদি আগে থেকেই কোন হোটেল বুকিং দেওয়া থাকে তবে তো তাতেই উঠবেন। আর না করা থাকলে আপনি কক্সবাজার বাস-স্ট্যান্ডে নেমে অটো নিয়ে কলাতলি চলে যেতে পারেন। সেখানে আপনার চাহিদা মত অনেক ধরনের থাকার আবাসিক হোটেল পাবেন।

কক্সবাজারে দর্শনীয় স্থান গুলি

কক্সবাজারের দর্শনীয় স্থান গুলি হচ্ছে, সুগন্ধা বিচ, লাবণী বিচ, ইনানি বিচ, পাটওয়ারটেক বিচ, হিমছড়ি পাহাড়, হিমছড়ি ঝরনা, একুরিয়াম ঘর, মহেশখালি দ্বীপ আর সর্বশেষ এবং অতি জনপ্রিয় স্থান সেন্টমার্টিনস দ্বীপ।

কোন কোন জায়গায় কিভাবে যাবেন?

আপনি যদি কলাতলিতে থাকেন, তবে অটো চালককে বললেই আপনাকে নিয়ে যাবে সুগন্ধা বিচে, একই ভাবে লাবণী বিচে। আপনি একদিনেই সুগন্ধা বিচ, লাবণী বিচ এবং একুরিয়াম ঘরে, ঘুরতে পারবেন। তবে বিচ গুলোতে বিকালে ঘুরতে ভাল লাগে। উপরুক্ত তিনটি জায়গায় কলাতলি থেকে অনেক কাছে।

হিমছড়ি পাহাড়, হিমছড়ি ঝরনা, ইনানি বিচ, পাটওয়ারটেক বিচ এই চারটি জায়গা একই রাস্তাই। তাই এ জায়গাগুলি আপনি একদিনেই ঘুরতে পারবেন। এই জায়গুলি দেখতে হলে আপনাকে একটি অটো রিজার্ভ করে নিতে হবে। অটো চালককে ভালভাবে একটু বললেই সে-ই আপনাকে দেখার মত জায়গাগুলোতে সুন্দরভাবে নিয়ে গিয়ে দেখাবে।

মহেশখালি দ্বীপে যাবার জন্য আলাদাভাবে একটাদিন বের করে রাখবেন। মহেশখালি দ্বীপে যাবার জন্য অটোতে করে সম্ভবত ২ নং ঘাটে যেতে হবে। তারপরও একটু অটো চালকদের জিজ্ঞাসা করে নিবেন। সেই আপনাদের ঘাটে নিয়ে যাবে। সেখান থেকে আপনি স্পিড বোটে করে ১৫ মিনিট এর মধ্যেই মহেশখালি দ্বীপে পৌছে যাবেন। আপনারা যদি ২ জন হন তবে রিক্সাই আর বেশি হলে অটোতে করে ঘুরতে পারেন। যেটাতেই যান তাদেরকে বললেই, যে যে জায়গাগুলি সেখানে দেখার মত সেগুলোতেই আপনাকে নিয়ে যাবে।

একটা বিষয় এইদিক দিয়ে খুব ভাল, যে পর্যটন জায়গুলি ঘুরার ব্যপারে এই চালক গুলি আপনাকে ঠকাবে না।

সেন্টমার্টিনস দ্বীপে কিভাবে যাবেন?

সেন্টমার্টিনস পুরো একদিনের ব্যপার। সেন্টমার্টিনস যেতে হলে তার আগের দিনই আপনাকে এজেন্টদের কাছে গিয়ে সম্পূর্ণ টাকা পরিশোধ করে কনফার্ম করতে হবে। সেন্টমার্টিনস যাবার জন্য সেখানে এজেন্টদের কোন অভাব নেই। জনপ্রতি ১৫০০/- টাকা থেকে প্যাকেজ শুরু। এই প্যাকেজে সকালের নাস্তা থেকে রাত্রের খাবার অন্তর্ভুক্ত।

সবঠিকঠাক হলে পরেরদিন খুব সকাল সকাল আপনাকে তারা আপনার হোটেল থেকে বাসে করে টেকনাফ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। টেকনাফে গিয়ে লঞ্চে উঠবেন। সেন্টমার্টিনস যাবার পথে সব চাইতে বেশি মজা পাবেন লঞ্চে। যাবার পথে বিভিন্ন অথিতি পাখির খেলা আর সমুদ্রের অবলিল এক দৃশ্য দেখে মন জুড়িয়ে যাবে। টেকনাফ থেকে লঞ্চে করে তাদের নিজস গাইড দিয়ে সেন্টমার্টিনস এর সকল দর্শনীয় স্থানগুলি ঘুরিয়ে দেখাবে। সেন্টমার্টিনস ঘুরাফিরা শেষ হলে তারাই আবার নিজ দ্বায়িত্বে আপনাকে আপনার হোটেল পর্যন্ত তাদের বাসে করে রেখে যাবে।


0 Comments

Leave a Reply

Avatar placeholder

Your email address will not be published. Required fields are marked *